বছর ঘুরে আসে ঈদ, কিন্তু কোরবানি দেওয়ার সাধ্য সবার হয় না। তাই তো একটি দিন মাংস-ভাত খাওয়ার ইচ্ছে পূরণে কোরবানি দেওয়া লোকজনের বাড়ি বাড়ি গিয়ে দু-এক টুকরো করে মাংস সংগ্রহ করেন এসব দরিদ্র মানুষ। এ কাজে বয়স্ক বৃদ্ধ-নারী-পুরুষ ছাড়াও শিশুদেরও দেখা যায়। (৭ ই জুন) শনিবার বিকেলে দেখা যায় কোরবানির মাংসের জন্য উত্তরার বেশির ভাগই প্রায় বাড়ির গেটের সামনে ভিড় করছেন দরিদ্র মানুষরা।
গ্রাম থেকে শহরের সকল অলিগলিতে পশু কোরবানির পর কোরবানি দাতারা যখন মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যস্ত তখন দু-এক টুকরো মাংসের জন্য এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করে মানুষগুলো। এমন দৃশ্য প্রায় সবখানে দেখা যায়।
কোরবানির মাংস নিতে আসা বৃদ্ধা আকলিমা বানু বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। ধনী লোকদের কোরবানিতে আমাদের হক থাকলেও তারা তা মানতে চায় না। বাড়ির সামনে গেলে তাড়িয়ে দেয়। আবার কখনও ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়। তাদের কাছে তো শুধু এক টুকরো মাংস চাই, তাড়িয়ে দিলেও বাব বার হাত বাড়াই। যদি এক টুকরো মাংস দেয়!’
তুরাগের এর পাকুরিয়া থেকে মাংস নিতে আসা নূর নাহার বলেন, আমাদের পরিবারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে, এক বেলা একটু মাংস ভাত খাওয়াবো ভাবছি কিন্তু উপরওলা কি ভাগ্য রেখেছে জানি না।
কোরবানি দেওয়া তুরাগের বাসিন্দা শিমুল তালুকদার বলেন, বছরজুড়ে কোরবানি ঈদের মতো একটি দিনের জন্য যারা অপেক্ষা করেন তাদের বড় একটা অংশ এসব দরিদ্র মানুষ। নুন আনতে যাদের পান্তা ফুরোয়, মাংস কেনা যাদের কাছে বিলাসিতা এই কোরবানি ঈদে তাদের স্বপ্ন জাগে মাংস ভাতের। তাই এই মানুষগুলো একটু সহানুভূতি কি পেতে পারে না?
কোরবানি দেওয়া একই এলাকার আলামিন শেখ বলেন, কোরবানি দিয়ে থাকি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য। সে ক্ষেত্রে ভাগের যতটুকু দরিদ্র মানুষেরা পাবে তা আমরা ভাগ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্যাকেটিং করে সাধ্যমতো মানুষকে দেওয়ার চেষ্টা করি।
ধর্মীয় নিয়ম অনুযায়ী কোরবানির পশুর মাংস তিন ভাগ করে একভাগ কোরবানিদাতা নিজের জন্য রেখে বাকি দুই ভাগের মধ্যে একভাগ নিকটাত্মীয়দের মধ্যে এবং আরেক ভাগ সমাজের অসহায় ও নিম্নআয়ের মানুষের মধ্যে বিতরণ করতে হয়।