দখল ও দূষণের অভিযোগকে ছাপিয়ে গাজীপুরের ভবানীপুর এলাকায় এম এন ডায়িং, প্রিন্টিং অ্যান্ড ওয়াশিং মিলস লিমিটেড এখন সরাসরি কৃষি উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রতিদিন নদীতে ভারি ও বিষাক্ত বর্জ্য ফেলে নদীর স্বাভাবিক পানি প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ফলে উজানে অন্তত আট কিলোমিটার নদীপথ এবং চার বর্গ কিলোমিটার বিস্তীর্ণ কৃষিজমি এখন বিষাক্ত পানিতে ডুবে আছে।
জানা গেছে, সদর উপজলার ভাওয়ালগড় ইউনিয়নে মোশাররফ কম্পোজিটের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত এন.এম ডায়িং মিলসের অবস্থান লবনদহ নদীর একেবারে কোলঘেঁষে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কারখানার উত্তরের দিকে বিশাল জলাশয়ের মাঝে নদীর চলার পথ রুদ্ধ প্রায়। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, প্রতিদিন মিল থেকে ফেলা হয় বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য—কাপড়ের টুকরো, পুরনো কাগজ, রাসায়নিক বস্তা, ইট-পাথর ও এমনকি উচ্ছিষ্ট খাবারও।
নদীর তীরে দেখা যায়, একদল নারী ভেসে আসা বর্জ্যের মধ্য থেকে পুনঃব্যবহারযোগ্য উপকরণ খুঁজে নিচ্ছেন। তাদের একজন জানান, প্রতিদিন সকালে এসে দেখি নতুন নতুন আবর্জনা। এসব থেকে প্লাস্টিক বা কাগজ আলাদা করে বিক্রি করি।
এদিকে প্রতিষ্ঠানটির এসব বর্জ্যে পানি দূষণ এবং মাটির গুণাগুণ নষ্ট হওয়ার ফলে আশপাশের জমিতে চাষাবাদ করা কঠিন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
স্থানীয় কৃষক কবির হোসেন জানান, কারখানার পাশে তার পঞ্চাশ শতাংশ জমির ধান বিষাক্ত পানিতে তলিয়ে সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে গেছে। যেখানে আগে কখনো এমন পরিস্থিতি হয়নি। তিনি বলেন, একই ঘটনা আমার আরেক জমিতেও, যদিও সেটি অন্য এক কৃষককে রেহান দিয়েছিলেন। সেও এখন ক্ষতির মুখে।
তাঁর অভিযোগ, এন.এম ডায়িং মিলের ভারি ও বিষাক্ত বর্জ্য নদীতে ফেলার কারণে তাঁর মতো অসংখ্য কৃষক এবার একইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে এম এন ডায়িং, প্রিন্টিং এন্ড ওয়াশিং মিলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশারফ হোসেনের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে গাজীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মামুনুর রশিদকে মুঠোফোনে কল দিলে তাকেও পাওয়া যায়নি।