টাকার লোভে টিকটকে শিশু সন্তানদের ব্যবহার করে ভিডিও বানিয়ে ফেসবুকে দেয়ার অভিযোগে শারমীন শিলা ওরফে ‘ক্রিম আপা’ নামের এক নারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন সাভার উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কাজী ইসরাত জামান। বুধবার (৯ এপ্রিল) আশুলিয়া থানায় এ মামলা দায়ের করেন তিনি।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, শারমিন শিলা একজন বিউটিশিয়ান। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘ক্রিম আপা’ নামে পরিচিত। সে মূলত মেকআপের জন্য বিভিন্ন রকম ক্রিম তৈরি করে তা বিক্রি করেন। তার পরিবারে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তাদেরকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন প্লাটফর্মে বিভিন্ন ধরনের ভিডিও তৈরি করে পোষ্ট করেন তিনি।
গত ৩ মার্চ বিকেল ৪টায় তার ফেসবুক আইডি থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। যেখানে দেখা যায়, বিবাদী তার মেয়ে জিমকে (বয়স আনুমানিক ২ বছর) জোরপূর্বক এক হাত দিয়ে চাপ দিয়ে মুখ হা করিয়ে অন্য হাতে জোরপূর্বকভাবে মুখের ভিতর কেক জাতীয় খাবার দিচ্ছে। মেয়ে খেতে চাচ্ছিল না বলে সে জোর করে মেয়ের মুখের ভেতর চাপ দিয়ে কেক জাতীয় খাবার দিতে থাকেন।
এজাহারে বলা হয়েছে, শিশুদেরকে আঘাত, উৎপীড়ন, অবহেলা ও মাতৃসুলভ আচরণ বর্জন করে শিশুর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ করেছেন ক্রিম আপা। যার কারণে শিশুরা শারীরিক ও মানসিকভাবে বিকারগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। ফলে সম্প্রতি ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিকমাধ্যমে নিন্দা, ক্ষোভ ও গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় ওই আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।
জানা গেছে, টাকা আয়ের জন্য কখনও মাথার চুল ন্যাড়া করে আবার কখনও ভারী কানের দুল লাগিয়ে টিকটক বানিয়ে সেই ভিডিও ফেসবুকে দেন শারমীন শিলা। এছাড়াও গায়ের রং ফরসা করার ক্রিম বিক্রি করায় ফেসবুকে ‘ক্রিম আপা’ বা ‘কিরিম আপা’ নামে পরিচিতি পেয়েছেন তিনি।
সাভারের বাইপাইল এলাকায় ‘ক্রিম আপা বিউটি পার্লার’ নামে শারমীন শিলার একটি বিউটি পার্লারও আছে। তিনি ভিডিওতে কীভাবে ক্রিম ব্যবহার করতে হবে, তা জানান। এর বাইরেও কী রান্না করছেন, কী খাচ্ছেন- এসব নিয়ে করা বিভিন্ন ভিডিওতে মেয়েকে হাজির করেন। মেয়ে ভয়ে চুপ করে থাকে। কখনও হাসে আবার কখনও অস্বাভাবিকভাবে কাঁদে। মেয়ে সারাক্ষণ আতঙ্কের মধ্যে থাকে তা বিভিন্ন ভিডিওতে স্পষ্ট বোঝা যায়।