• শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ০৯:৫৫ অপরাহ্ন
  • [gtranslate]
Headline
খালেদা জিয়াকে ঈদ শুভেচ্ছা জানালেন ছেলে ও পুত্রবধূ-নাতনিরা দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানালেন প্রধান উপদেষ্টা রাজধানীর তুরাগ এলাকা থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী উত্তরার দিয়াবাড়ি হাটে গোলাপি গরু ঘিরে চমক, উৎসাহীদের ভিড় বিমানবন্দরে হয়রানির শিকার, ক্ষো-ভ প্রকাশ প্রবাসীর!যা জানাল বেবিচক শাহজালাল বিমানবন্দরে যাত্রীদের ভোগান্তির নেই শেষ আব্দুল্লাহপুর বাস কাউন্টারে বিআরটিএ’র অভিযাননন,৮ মামলায় ৭০,০০০ হাজার টাকা জরিমানা শাহজালাল বিমানবন্দরে লাগেজ চুরি,হারিয়ে যাওয়া থামছেই না এ যেন প্রতিদিনের গল্প উত্তরায় ঈদে চুরি-ছিনতাই ঠেকাতে নিরাপত্তা ব্যবস্থার জোরদার করা হয়েছে ; ডিসি এনসিপি ঢাকা মহানগর উত্তরের ‘উত্তরা জোন’ প্রধানের দায়িত্ব পেলেন মাশকুর রাতুল

শাহজালাল বিমানবন্দরে যাত্রীদের ভোগান্তির নেই শেষ

এলেন বিশ্বাস / ৪৬ Time View
Update : মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫
© Jubair Bin Iqbal www.jbigallery.com Contact Info ☎ +8801714332553 ✉ [email protected]

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ২ নম্বর টার্মিনালের ক্যানোপি-১-এর ঠিক সামনেই এলোমেলো করে ছড়ানো বেশকিছু ফাঁকা ট্রলি। সেখানে যাত্রী ওঠানোর জন্য বিমানবন্দরকেন্দ্রিক দালাল ও চালকদের সিন্ডিকেটের অনেক যানবাহন এলোমেলো জটলা করে রাখা। অন্যদিকে বিভিন্ন ফ্লাইটে ঢাকায় আসা দেশি-বিদেশি যাত্রীরা তখন নিজেদের লাগেজসহ নানা মালামাল নিয়ে নির্ধারিত গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু দালাল-সিন্ডিকেটের গাড়ির জটলায় যাত্রীদের গাড়ি ঢুকতে পারছিল না। এমন বিশৃঙ্খলা আর তীব্র গরমে এক অস্বস্তিকর সময় পার করছিলেন যাত্রীরা।

মঙ্গলবার (২৭ মে) সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর পর্যন্ত সেখানে অবস্থান করে এমনই চিত্র দেখা গেছে।

কেবল টার্মিনালের ‘ক্যানোপি-১’ নম্বরে নয়, এই বিমানবন্দর টার্মিনালের সামনের অংশেও সার্বিক পরিবেশ ও ব্যবস্থাপনায় চরম বেহাল অবস্থা বিরাজ করতে দেখা গেছে; যা নিয়ে চরম হতাশা প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। সামনের রাস্তা ক্ষয়ে খানাখন্দ তৈরি, নির্মাণ কাজের এলোমেলো যন্ত্রাংশ, ধুলাবালিতে বায়ু ও শব্দ দূষণে নাজেহাল হচ্ছেন দেশি-বিদেশি যাত্রীরা। প্রবাসীরা অনেক দিন পর দেশে ফিরে প্রশ্ন তুলছেন শাহজালালের দুরবস্থা নিয়ে।

তারা বলছেন, বিমানবন্দর টার্মিনালের ভেতরের ব্যবস্থাপনা মোটামুটি আধুনিক ও উন্নত হলেও বাইরের চিত্র যেন বাস টার্মিনালের মতো। ফলে ভেতরে যতই সুন্দর ব্যবস্থাপনা থাকুক, বাইরের চিত্র হতাশ করছে দেশি-বিদেশি যাত্রীদের। কোনো দেশের বিমানবন্দরের শৃঙ্খলা ও দৃষ্টিনন্দন পরিবেশ সেদেশের অভ্যন্তরীণ চিত্র বোঝানোর জন্যও জরুরি। কিন্তু এখানে এসে বিদেশি যাত্রীদের হতাশই হতে হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে বিমানবন্দরের দিকে ঢুকে কিছুটা এগোতেই গোল চত্বরের কাছে বেশ খানিকটা রাস্তা ভাঙা। গোল চত্বরের জায়গাটিও খোলামেলা ও যত্রতত্র গাড়ি পার্ক করে রাখা হয়েছিল। এ সময় দেখা পাই চার বছর পর সৌদি আরব থেকে ফেরা রাইসুল ইসলামের। তিনি এই পথে লাগেজ নিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন।

প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বিমানবন্দরটির চারপাশের অবস্থা দেখে দুঃখ করে বলেন, ‘এ কী অবস্থা শাহজালাল বিমানবন্দরের? প্রবাসে থাকার কারণে আমরা তো অনেক বিমানবন্দরই দেখি। সেগুলো অনেক সাজানো-গোছানো। কিন্তু দেশে ফিরে যখন নিজেদের বিমানবন্দরটির এমন দুরবস্থা দেখি, তখন খারাপ লাগে। কারণ এই বিমানবন্দরটিই প্রথম একজন বিদেশিকে আমাদের দেশ সম্পর্কে এক ধরনের ধারণা দেয়। অথচ, যত্রতত্র যানবাহনের জটলা। যেটুকু খোলা জায়গা আছে সেখানেও দৃষ্টিনন্দন কোনো স্থাপনা নেই।’

আরেকটু এগিয়ে দেখা যায়, ক্যানোপি-১ নম্বরে যেতে সেখানে প্রায় আধা কিলোমিটার পর্যন্ত গাড়ির সারি। পাশে যেখানে নো-পার্কিংয়ের সাইনবোর্ড দেওয়া, সেখানেই সারিবদ্ধভাবে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। এই প্রতিবেদক কিছুক্ষণ সেখানে দাঁড়াতেই যাত্রী মনে করে চলে আসেন গাড়ির দালালরা। কোনো কথা বলার সুযোগ না দিয়েই দেখাতে থাকেন পার্কিংয়ে রাখা গাড়িগুলো। কোন গাড়ি লাগবে তা জানতে চান। তাতে বোঝা গেল, নো-পার্কিংয়ের স্থানে রাখা গাড়িগুলো মূলত ওই দালালদের নিয়ন্ত্রণে থাকে।

আরও সামনে এগিয়ে ক্যানোপি-১ নম্বরে গিয়ে দেখা যায়, লাগেজ নিয়ে সেখানে অপেক্ষায় আছেন বিদেশ থেকে আসা যাত্রীরা। তাদের একজন সাতক্ষীরার রাসেল। দুবাই থেকে আসা রাসেল খবরের কাগজকে বলেন, ‘ফ্লাইট থেকে নামার পর ৩০ মিনিটেই লাগেজ পেয়ে গেছি। বিমানবন্দরের ভেতর থেকেই প্রবাসী ট্যাক্সি ভাড়া করেছি। কিন্তু বাইরে এসে দাঁড়িয়ে আছি প্রায় ১ ঘণ্টা, কিন্তু তার নির্ধারিত গাড়িটি টার্মিনাল এলাকার ভেতরে থাকলেও ক্যানোপি-১ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনি। মূলত বিভিন্ন গাড়ি, সিএনজিচালিত অটোরিকশা এমনকি মোটরসাইকেলও এখানে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে জটলা করায় পেছনের গাড়িগুলো আসতে পারছে না।’

দুপুর সাড়ে ১২টায় সৌদি আরব থেকে ঢাকায় পৌঁছান প্রবাসী সাইদুর রহমান। প্রায় অভিন্ন বিড়ম্বনার শিকার হয়ে ক্ষোভের সঙ্গে তিনি বলেন, ‘এখানে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলেই দেখবেন কতজন এসে আপনাকে গাড়ি নেওয়ার কথা জিজ্ঞেস করেন। তাদের গাড়ি নিলে কিছুক্ষণের মধ্যেই গাড়িগুলো চলে আসে। অথচ বাইরের গাড়ি ঢুকতে গেলেই দালালরা তাদের গাড়ি দিয়ে জট লাগিয়ে রাখে।’

এ সময় আরও একাধিক যাত্রী বলেছেন, সাধারণত বিদেশের বিমানবন্দরগুলোতে যাত্রীদের শহরে বা অন্যত্র সহজে যাতায়াতের বিশেষ ব্যবস্থা রেখেছে। এই ব্যবস্থায় গণপরিবহন বা শাটল সার্ভিস থাকে। আমাদের এই বিমানবন্দরের উল্টো পাশেও একটি রেলওয়ে স্টেশন আছে, মূল সড়কে গেলে ফুটপাতকেন্দ্রিক বাস স্টপেজ বা কাউন্টার আছে ঠিকই, কিন্তু সেগুলো বিমানবন্দরের টার্মিনাল ভবন থেকে অনেকটা দূরে। ফলে কোনো প্রবাসী যদি দুই-তিনটি লাগেজ বা সঙ্গে ব্যাগ নিয়ে বাস স্টপেজ বা রেলস্টেশনে যেতে চান সেটি তার জন্য কঠিনসাধ্য হয়ে দাঁড়ায়। ফলে এখানে প্রবাসীদের দেখলেই দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য অনেক বেড়ে যায়।

শাহজালাল বিমানবন্দর সংশ্লিষ্টরা জানান, গত বছরের জুনে বিমানবন্দর টার্মিনাল-২ থেকে বিমানবন্দর গোলচত্বর, উত্তরা জসীম উদদীন রোড, বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন, বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩ হয়ে আবার বিমানবন্দর গোলচত্বর ও বিমানবন্দর টার্মিনাল-২ এ ফেরত আসবে-এমন শাটল বাস সার্ভিস চালু হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে তা বন্ধ আছে।

এ ছাড়া গত ৫ আগস্টের পর বিমানবন্দর এলাকাকে নীরব এলাকাও ঘোষণা করা হয়। সঙ্গে প্লাস্টিকমুক্ত করার ঘোষণাও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু গতকাল দেখা যায়, নীরব এলাকার সাইনবোর্ড থাকলেও তা মানছেন না কেউই। আর নিয়ম না মানলে জরিমানা করারও কোনো ম্যাজিস্ট্রেট নেই সেখানে। এ ছাড়া নির্মাণকাজ চলায় ধুলাবালি ও বায়ু দূষণে অস্বস্তিকর এক পরিবেশ বিরাজ করে সেখানে।

সার্বিক চিত্র সম্পর্কে জানতে চাইলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন রাগিব সামাদ বলেন, ‘এখানে আমি নতুন। খুব অল্প সময় আগে যোগ দেওয়ায় সব বিষয়ে ভালোভাবে জানি না। তবে শাটল বাস সার্ভিসটি সম্ভবত এখন বন্ধ আছে।’

ক্যানোপিতে গাড়ি জটলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিমানবন্দরের নিয়ম হচ্ছে ক্যানোপিতে গাড়ি দুই মিনিটের বেশি দাঁড়াতে পারবে না। কিন্তু যাত্রী নিতে যখন গাড়িগুলো আসে তখন লাগেজ তোলাসহ নানা কারণ দেখিয়ে দীর্ঘ সময় জটলা করে রাখছে। পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির কারণে নিরাপত্তা কর্মীদেরও অনেক সময় কিছু করার থাকে না। বিমানবন্দরের শৃঙ্খলা বজায় রাখা আমাদের সবার দায়িত্ব। এ বিষয়ে সবার আন্তরিক সহযোগিতা প্রয়োজন।’

Facebook Comments Box


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
bdit.com.bd
error: Content is protected !!