ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক অস্থায়ী পশুর হাটের ইজারাদার এর নাম ঘোষণা না করলেও দ্বিতীয়বারের মতো উত্তরা দিয়াবাড়ি হার্টের দখল নিয়েছেন এস এ ব্রাদার্স এর স্বত্বাধিকারী ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এ খোকন। এর আগে রসিদ এন্টারপ্রাইজ শিডিউল জমার আগেই হাট দখল নিয়ে কাজকর্ম শুরু করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
তথ্য বলছে, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অস্থায়ী পশুর হাট নিয়ে দরপত্র আহবান করে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন। এই হিসেবে দিয়া বাড়ি পশুর হাটের ইজারার জন্য দরপত্র দাখিল করেন ১৫ টি প্রতিষ্ঠান। চলতি মাসের ২৭ মে সিটি কর্পোরেশন অডিটোরিয়ামে প্রত্যেক দরদাতার সিডিউল উন্মুক্ত ঘোষণা করা হয়। সে সময় শিডিউলে থাকা তিন নাম্বার দরদাতা হিসেবে গৃহীত হয় রশিদ এন্টারপ্রাইজ। দ্বিতীয় নাম্বারে ছিলেন চায়না বাংলা ও এক নাম্বার দরদাতা হিসেবে দশ কোটি এক লক্ষ টাকার দরপত্র দাখিল করেন এস এ ব্রাদার।
সে সময় এস এ ব্রাদার্স পে অর্ডারের ডকুমেন্ট না দেয়ায় তার দরপত্রটি বাতিলের দাবিতে হট্টগোল বাধে। সেই হিসেবে বৈধ সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে নির্বাচিত হয় চায়না বাংলা। তবে ২৩ মে দুই হাজার ২৫ রশিদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী এম কফিল উদ্দিন স্বাক্ষরিত হাটের প্রস্তুতি কাজ করার ওয়ার্ক পারমিট দিয়েছিলেন একাধিক ডেকোরেটর কোম্পানিকে। ইজারার আগেই ওয়ার্ক পারমিট দিয়ে হার্ট দখলের বিষয়ে অভিযোগ উঠলে সেনাবাহিনী কর্তৃক সেই কর্মযজ্ঞ বন্ধ করা হয়। পরে ২৭ মে পুনরায় দরপত্র পত্র আহ্বান করা হয়।
শুক্রবার (৩০ মে) দুপুরে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ কোন ইজারাদারের নাম ঘোষণা করে নোটিশ দেওয়া হয়নি। এদিকে সকাল থেকেই হাটের সম্পূর্ণ দখল নিয়ে কর্মযজ্ঞ চালাতে দেখা গেছে এস এ ব্রাদার্স এন্টারপ্রাইজের কয়েকজনকে। পরে বিকেল নাগাদ সেনাবাহিনী হাটের হাসিল ঘরগুলোতে অবস্থান নেয়। আবার বৈধ উপায়ে সর্বোচ্চ দরজাটা হিসেবে রয়েছেন চায়না বাংলা লিংক এর প্রোপাইটর মিজানুজ্জামান রুবেল। এদিকে হাটের প্রায় এক তৃতীয়াংশ জোরে কোরবানির পশুতে পূর্ণ হয়েছে, বৈরী আবহাওয়ায় ও আইনগত জটিলতার কারণে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না হাটের।
বৃষ্টিতে ভিজে কোরবানির পশুগুলো স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন আবার অন্যদিকে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ব্যবসায়ীরা। এদিকে সেনাবাহিনী কর্তৃক দুপুর থেকে মাইকিং করে ব্যবসায়ীদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে, এখনো হাটের কোন ইজারাদার নেই, কেউ হাসিলে টাকা চাইতে আসলে সেনাবাহিনীর কাছে সোপর্দ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন সার্বিক নিরাপত্তা ও সুযোগ সুবিধা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন উনারা। অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।
এই বিষয়ে জানতে ঢাকা মহানগর উত্তর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এ খোকন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে আমি হাট পেয়েছি, সিটি কর্পোরেশন থেকে আমাকে অনুমতি দিয়েছে, সিটি কর্পোরেশনের ওয়েবসাইটে এই নোটিশ রয়েছে সেই আলোকে আমার লোকজন হাটে ছিলো, এখানে দখলের প্রশ্নই আসে না। সেনাবাহিনীকে সিটি কর্পোরেশনের সাথে কথা বলিয়ে দিয়েছি, উনারা কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে দেখছেন। রোববার টাকা জমা দিলে আমাকে ওয়ার্ক অর্ডার দিবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক মো এজাজ বলেন, এখনো ইজারা কারো নামে দেয়া হয়নি, ব্যবস্থাপনা কমিটি একদিন সময় বেশি নিচ্ছে, আগামীকাল দুপুরের মধ্যে সবগুলো ইজারাদারের নাম একসাথে ঘোষণা করা হবে। আজকে যারা দখলে গিয়েছিল সেনাবাহিনীর মাধ্যমে তাদেরকে হাট থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।