
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ড এবং পেইং ওয়ার্ড দখল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ফিজিওথেরাপি সেন্টারের কর্মীরা। অভিযোগ উঠেছে, সেখানে এককভাবে বাণিজ্য করতে একাধিক ফিজিওথেরাপি সেন্টারের কর্মীরা পেশীশক্তি প্রয়োগ করছেন।
রোগীদের থেরাপি দেওয়ার জন্য ওয়ার্ড ভাগাভাগিকে কেন্দ্র করে তর্কবিতর্কের জের ধরে বৃহস্পতিবার মেঘনা থেরাপি সেন্টার ও শাহজালাল ফিজিওথেরাপি সেন্টারের কর্মীরা প্রকাশ্যে মারামারিতে লিপ্ত হয়।
এতে মেঘনা ফিজিওথেরাপি সেন্টারের কর্মী চামেলি পাখি (২৫) গুরুতর আহত হন। তাকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় মেঘনা ফিজিওথেরাপি সেন্টারের মালিক গোলাম রসুল কোতোয়ালি মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, তার ফিজিওথেরাপি সেন্টারের কর্মচারী চামেলি পাখি থেরাপির কাজে গেলে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে শাহজালাল ফিজিওথেরাপি সেন্টারের মালিক বাচ্চুসহ তার প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন কর্মচারী তাকে মারধর করে। এতে চামেলি গুরুতর আহত হন।
সূত্র জানায়, মেঘনা ও শাহজালাল ফিজিওথেরাপি সেন্টারের কর্তৃপক্ষ জেনারেল হাসপাতালের ওয়ার্ড এককভাবে দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। এরই জের ধরে বৃহস্পতিবার পুরুষ পেইং ওয়ার্ডে দুই প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের মধ্যে গোলযোগের সৃষ্টি হয়। একটি পক্ষ টাকার ভাগ নিয়ে ফিজিওথেরাপি কর্মীদের অবৈধভাবে প্রবেশ করার সুযোগ করে দিচ্ছেন। যে কারণে তারা ওয়ার্ড দখলে ব্যস্ত রয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেনারেল হাসপাতালকে ঘিরে ১৩টি অবৈধ ফিজিওথেরাপি সেন্টার গড়ে উঠেছে। এর মধ্যে সেবা ফিজিওথেরাপি সেন্টার, শাহজালাল ফিজিওথেরাপি সেন্টার, সোনালী ফিজিওথেরাপি সেন্টার, নাজনীন ফিজিওথেরাপি সেন্টার, মেঘনা ফিজিওথেরাপি সেন্টার উল্লেখযোগ্য। এসব প্রতিষ্ঠানের ৪/৫ কর্মী নিয়ে অবৈধভাবে হাসপাতালে প্রবেশ করে ভর্তি রোগীদের থেরাপি দিয়ে আসছেন। বর্তমানে ফিজিওথেরাপি দেওয়ার নামে ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফিজিওথেরাপি কর্মীদের হাসপাতালে প্রবেশ না করতে প্রচার করলেও তারা মানছেন না। একটি পক্ষকে ম্যানেজ করে তারা হাসপাতালে অবাধে যাতায়াত করছেন। অযোগ্য ও কম যোগ্যতাসম্পন্ন কর্মীদের দিয়ে রোগীদের ফিজিওথেরাপি দেওয়ার ফলে রোগীরা উপকারের পরিবর্তে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হুসাইন শাফায়াত জানান, ফিজিওথেরাপি কর্মীরা অবৈধভাবে হাসপাতালে প্রবেশ করেন। তারা চিকিৎসকের নির্দেশনা ছাড়াও ইচ্ছামতো রোগীদের থেরাপি দিচ্ছেন বলে শুনেছেন। বিগত দিনে তাদের হাসপাতালে প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও তারা গোপনে প্রবেশ করছেন। দুই প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা হাসপাতালের পুরুষ পেইং ওয়ার্ডে গোলযোগ করেছেন বলেও তিনি শুনেছেন। ফিজিওথেরাপি সেন্টারের কর্মীদের হাসপাতালে অবৈধভাবে প্রবেশের ব্যাপারে নতুন করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।